দুদকের তালিকায় ৮০ প্রভাবশালী
- আপলোড সময় : ২৩-০৮-২০২৪ ১২:০০:১৪ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ২৩-০৮-২০২৪ ১২:০০:১৪ পূর্বাহ্ন
একসময় ছিলেন প্রভাবশালী মন্ত্রী-এমপি, ব্যবসায়ী বা পুলিশ কর্মকর্তা। রাজনৈতিক প্রভাব আর চেয়ারের দাপট খাটিয়ে হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছিলেন। তবে সম্প্রতি ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে তাদের অবৈধ স¤পদের পাহাড়।
দুর্নীতি দমন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী বিগত সরকারের মদদপুষ্ট প্রায় ৮০ জন প্রভাবশালীর অনিয়ম-দুর্নীতি আর অবৈধ স¤পদের অনুসন্ধানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে অনেকের বিষয়ে অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ করে তথ্য সংগ্রহের কাজও শুরু করেছে সংস্থাটি। তবে এ মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে, কোনোভাবেই যেন এসব অবৈধ অর্থ সরিয়ে ফেলা না যায় সে বিষয়ে। এরই ধারাবাহিকতায় গত এক সপ্তাহে অন্তত ১৫ জনের ব্যাংক হিসাবসহ স¤পদ জব্দ করা হয়েছে। সন্দেহজনক, অস্বাভাবিক এই বিপুল স¤পদ জব্দে দুদকের সঙ্গে সমান্তরালভাবে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান :
বস্তা ভরে ঘুষ নেওয়াসহ চাকরি, পদোন্নতি, বদলি বাণিজ্য, এনজিও প্রতিষ্ঠানকে ক্লিয়ারেন্স দিয়ে ঘুষ গ্রহণ আর ক্ষমতার অপব্যবহার করে হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে দুদক। সংস্থার দাবি, এসব অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় অনুসন্ধানে নেমেছেন তারা। এরই ধারাবাহিকতায় এক সময়ের দাপুটে এই মন্ত্রীসহ স্ত্রী-সন্তানদের ব্যক্তিগত ও মালিকানাধীন সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। একই সঙ্গে তাদের হিসাবের সব ধরনের লেনদেনের তথ্য চেয়েছে সংস্থাটি। বিএফআইইউয়ের পক্ষ থেকে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান খান, তার স্ত্রী লুৎফুল তাহমিনা খান, ছেলে সাফি মুদ্দাসির খান এবং মেয়ে সাফিয়া তাসনিম খানের নামে থাকা সব ধরনের ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক অ্যাকাউন্ট বন্ধ থাকবে।
হাছান মাহমুদ :
সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা হাছান মাহমুদ ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা সব ধরনের ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দিয়েছে বিএফআইইউ। গত ১১ আগস্ট বিএফআইইউয়ের দেওয়া নির্দেশটি সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়েছে। নির্দেশে বলা হয়, মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ, তার স্ত্রী নুরুন ফাতেমা এবং মেয়ে নাফিসা জুমাইনা মাহমুদের ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়ী হিসাব জব্দ করতে হবে। ২০১২ সালের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের আওতায় এ নির্দেশ দেওয়া হয়। হাছান মাহমুদ ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ স¤পাদক।
২০২৪ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের পর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে সরকার গঠিত হয়, সেখানে তাকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। এর আগে তিনি তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। সরকারে যাদের অত্যন্ত প্রভাবশালী হিসেবে গণ্য করা হতো, তাদের মধ্যে হাছান মাহমুদ অন্যতম।
সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক :
সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। ১৪ আগস্ট দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠায়। এতে বলা হয়, আগামী ৩০ দিন এসব হিসাবে কোনো ধরনের লেনদেন করা যাবে না। প্রয়োজনে লেনদেন স্থগিত করার এই সময় বাড়ানো হবে।
সাবেক সংসদ সদস্য মির্জা আজম ও জান্নাত আরা হেনরি :
আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক সংসদ সদস্য মির্জা আজম ও তার স্ত্রী জান্নাত আরা হেনরির অ্যাকাউন্টও জব্দ করা হয়। অর্থ পাচার নিরোধ-সংক্রান্ত ২০১২ সালের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী জব্দের আদেশ দেয় বিএফআইইউ।
সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নওফেল ও তার পরিবারের ব্যাংক হিসাব জব্দ :
সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবং তার পরিবারের সব সদস্যের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়ে দেশের প্রতিটি ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান :
সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার স্ত্রী ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের চেয়ারম্যান রুখমিলা জামানের নামে থাকা সব ধরনের ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দিয়েছে বিএফআইইউ। গত সপ্তাহে এই নির্দেশ দেওয়া হয়।
শিবলী রুবাইয়াতের ব্যাংক হিসাব জব্দ :
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম ও তার ছেলে জুহায়ের সারার ইসলামের ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ২০ আগস্ট তাদের হিসাব জব্দ করা হয়।
সাবেক ডিবি প্রধান হারুন :
চরম স্বেচ্ছাচারী এবং দাপুটে সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার ও ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদের বিপুল বিত্ত-বৈভবের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। আয়ের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হাজার কোটি টাকার স¤পদ যে অবৈধ পন্থায় অর্জন করেছেন হারুন, সে বিষয়ে মোটামুটি নিশ্চিত দুদক। আর তাই স্ত্রীসহ হারুনের সব ব্যাংক হিসাবও জব্দ করা হয়েছে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে।
এ ছাড়া জব্দ করা হয়েছে সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আরাফাত ও তার স্ত্রী শারমিন মুশতারীর নামে থাকা সব ধরনের ব্যাংক হিসাব। জব্দের তালিকায় আরও আছেন সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, তার ভাই একেএম সেলিম ওসমান ও তাদের পরিবারের সদস্যদের অ্যাকাউন্ট। অবৈধ স¤পদ অর্জনের অভিযোগে জব্দ করা হয়েছে শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই, সাবেক সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন ও তার ছেলে শেখ সারহান নাসের তন্ময়ের ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক ব্যাংক হিসাব। শেখ হেলাল, তার ছেলে তন্ময় ও ছোট মেয়ে শেখ ফজিলা শারমীনের নাম এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য দিয়ে চিঠিতে বলা হয়েছে, মানি লন্ডারিং আইনের সংশ্লিষ্ট ধারা অনুযায়ী তাদের ব্যাংক হিসাব ও লেনদেন স্থগিত থাকবে। নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, কোনো হিসাব স্থগিত করা হলে হিসাব সংশ্লিষ্ট তথ্য বা দলিল যেমন-হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি ও লেনদেন বিবরণী ইত্যাদি চিঠি দেওয়ার তারিখ থেকে ৫ কার্যদিবসের মধ্যে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে বিএফআইইউর কাছে পাঠাতে হবে।
এ ব্যাপারে দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন জানান, বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে সাবেক মন্ত্রী, এমপি, আমলা এবং সরকারি কর্মকর্তার বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে সংস্থাটি। অনেক দিন আগে থেকেই তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলমান ছিল। যাচাই-বাছাইয়ে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর, কমিশন থেকে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অনুসন্ধান চলমান থাকা অবস্থায় যেন তারা এই বিপুল পরিমাণ অর্থ সরিয়ে ফেলতে না পারেন সে জন্য ব্যাংক হিসাব, স্থাবর-অস্থাবর স¤পদ জব্দ করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে দুদক। কখনো দুদকের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে, আবার কখনো সন্দেহজনক লেনদেন দেখে নিজে থেকে তথ্য সংগ্রহসহ হিসাব জব্দের মাধ্যমে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ করছে বিএফআইইউ।
দুদকের তালিকায় ৮০ প্রভাবশালী
সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
একসময় ছিলেন প্রভাবশালী মন্ত্রী-এমপি, ব্যবসায়ী বা পুলিশ কর্মকর্তা। রাজনৈতিক প্রভাব আর চেয়ারের দাপট খাটিয়ে হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছিলেন। তবে সম্প্রতি ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে তাদের অবৈধ স¤পদের পাহাড়।
দুর্নীতি দমন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী বিগত সরকারের মদদপুষ্ট প্রায় ৮০ জন প্রভাবশালীর অনিয়ম-দুর্নীতি আর অবৈধ স¤পদের অনুসন্ধানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে অনেকের বিষয়ে অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ করে তথ্য সংগ্রহের কাজও শুরু করেছে সংস্থাটি। তবে এ মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে, কোনোভাবেই যেন এসব অবৈধ অর্থ সরিয়ে ফেলা না যায় সে বিষয়ে। এরই ধারাবাহিকতায় গত এক সপ্তাহে অন্তত ১৫ জনের ব্যাংক হিসাবসহ স¤পদ জব্দ করা হয়েছে। সন্দেহজনক, অস্বাভাবিক এই বিপুল স¤পদ জব্দে দুদকের সঙ্গে সমান্তরালভাবে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান :
বস্তা ভরে ঘুষ নেওয়াসহ চাকরি, পদোন্নতি, বদলি বাণিজ্য, এনজিও প্রতিষ্ঠানকে ক্লিয়ারেন্স দিয়ে ঘুষ গ্রহণ আর ক্ষমতার অপব্যবহার করে হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে দুদক। সংস্থার দাবি, এসব অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় অনুসন্ধানে নেমেছেন তারা। এরই ধারাবাহিকতায় এক সময়ের দাপুটে এই মন্ত্রীসহ স্ত্রী-সন্তানদের ব্যক্তিগত ও মালিকানাধীন সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। একই সঙ্গে তাদের হিসাবের সব ধরনের লেনদেনের তথ্য চেয়েছে সংস্থাটি। বিএফআইইউয়ের পক্ষ থেকে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান খান, তার স্ত্রী লুৎফুল তাহমিনা খান, ছেলে সাফি মুদ্দাসির খান এবং মেয়ে সাফিয়া তাসনিম খানের নামে থাকা সব ধরনের ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক অ্যাকাউন্ট বন্ধ থাকবে।
হাছান মাহমুদ :
সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা হাছান মাহমুদ ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা সব ধরনের ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দিয়েছে বিএফআইইউ। গত ১১ আগস্ট বিএফআইইউয়ের দেওয়া নির্দেশটি সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়েছে। নির্দেশে বলা হয়, মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ, তার স্ত্রী নুরুন ফাতেমা এবং মেয়ে নাফিসা জুমাইনা মাহমুদের ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়ী হিসাব জব্দ করতে হবে। ২০১২ সালের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের আওতায় এ নির্দেশ দেওয়া হয়। হাছান মাহমুদ ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ স¤পাদক।
২০২৪ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের পর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে সরকার গঠিত হয়, সেখানে তাকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। এর আগে তিনি তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। সরকারে যাদের অত্যন্ত প্রভাবশালী হিসেবে গণ্য করা হতো, তাদের মধ্যে হাছান মাহমুদ অন্যতম।
সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক :
সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। ১৪ আগস্ট দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠায়। এতে বলা হয়, আগামী ৩০ দিন এসব হিসাবে কোনো ধরনের লেনদেন করা যাবে না। প্রয়োজনে লেনদেন স্থগিত করার এই সময় বাড়ানো হবে।
সাবেক সংসদ সদস্য মির্জা আজম ও জান্নাত আরা হেনরি :
আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক সংসদ সদস্য মির্জা আজম ও তার স্ত্রী জান্নাত আরা হেনরির অ্যাকাউন্টও জব্দ করা হয়। অর্থ পাচার নিরোধ-সংক্রান্ত ২০১২ সালের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী জব্দের আদেশ দেয় বিএফআইইউ।
সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নওফেল ও তার পরিবারের ব্যাংক হিসাব জব্দ :
সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবং তার পরিবারের সব সদস্যের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়ে দেশের প্রতিটি ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান :
সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার স্ত্রী ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের চেয়ারম্যান রুখমিলা জামানের নামে থাকা সব ধরনের ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দিয়েছে বিএফআইইউ। গত সপ্তাহে এই নির্দেশ দেওয়া হয়।
শিবলী রুবাইয়াতের ব্যাংক হিসাব জব্দ :
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম ও তার ছেলে জুহায়ের সারার ইসলামের ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ২০ আগস্ট তাদের হিসাব জব্দ করা হয়।
সাবেক ডিবি প্রধান হারুন :
চরম স্বেচ্ছাচারী এবং দাপুটে সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার ও ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদের বিপুল বিত্ত-বৈভবের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। আয়ের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হাজার কোটি টাকার স¤পদ যে অবৈধ পন্থায় অর্জন করেছেন হারুন, সে বিষয়ে মোটামুটি নিশ্চিত দুদক। আর তাই স্ত্রীসহ হারুনের সব ব্যাংক হিসাবও জব্দ করা হয়েছে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে।
এ ছাড়া জব্দ করা হয়েছে সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আরাফাত ও তার স্ত্রী শারমিন মুশতারীর নামে থাকা সব ধরনের ব্যাংক হিসাব। জব্দের তালিকায় আরও আছেন সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, তার ভাই একেএম সেলিম ওসমান ও তাদের পরিবারের সদস্যদের অ্যাকাউন্ট। অবৈধ স¤পদ অর্জনের অভিযোগে জব্দ করা হয়েছে শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই, সাবেক সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন ও তার ছেলে শেখ সারহান নাসের তন্ময়ের ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক ব্যাংক হিসাব। শেখ হেলাল, তার ছেলে তন্ময় ও ছোট মেয়ে শেখ ফজিলা শারমীনের নাম এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য দিয়ে চিঠিতে বলা হয়েছে, মানি লন্ডারিং আইনের সংশ্লিষ্ট ধারা অনুযায়ী তাদের ব্যাংক হিসাব ও লেনদেন স্থগিত থাকবে। নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, কোনো হিসাব স্থগিত করা হলে হিসাব সংশ্লিষ্ট তথ্য বা দলিল যেমন-হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি ও লেনদেন বিবরণী ইত্যাদি চিঠি দেওয়ার তারিখ থেকে ৫ কার্যদিবসের মধ্যে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে বিএফআইইউর কাছে পাঠাতে হবে।
এ ব্যাপারে দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন জানান, বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে সাবেক মন্ত্রী, এমপি, আমলা এবং সরকারি কর্মকর্তার বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে সংস্থাটি। অনেক দিন আগে থেকেই তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলমান ছিল। যাচাই-বাছাইয়ে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর, কমিশন থেকে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অনুসন্ধান চলমান থাকা অবস্থায় যেন তারা এই বিপুল পরিমাণ অর্থ সরিয়ে ফেলতে না পারেন সে জন্য ব্যাংক হিসাব, স্থাবর-অস্থাবর স¤পদ জব্দ করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে দুদক। কখনো দুদকের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে, আবার কখনো সন্দেহজনক লেনদেন দেখে নিজে থেকে তথ্য সংগ্রহসহ হিসাব জব্দের মাধ্যমে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ করছে বিএফআইইউ।
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ